উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আগামী জুলাই থেকে মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) বদলে বাংলাদেশে চালু হচ্ছে ১০ বছর মেয়াদী ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট)।
মঙ্গলবার (২১ মে) এই উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই পাসপোর্টের মেয়াদ ১০ বছর হবে বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ই-পাসপোর্টের ফি হবে দ্বিগুণ। পাশাপাশি ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্টও প্রদান কর হবে। বর্তমানে সাধারণ পাসপোর্টের ফি ৩৪৫০ টাকা ও জরুরি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ৬৯০০ টাকা রয়েছে।
পাসপোর্ট অধিদপ্তর ই-পাসপোর্টের ক্ষেত্রে অতিজরুরি সেবা যোগ করার প্রস্তাব করেছে। যদিও ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ এর জন্যও গুণতে হবে আলাদা ফি।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার গাইড লাইন অনুসারে ২০১০ সালের ১ এপ্রিল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বা এমআরপি কার্যক্রম চালু হয়।
বর্তমানে দেশে ও বিদেশে অবস্থিত বিভিন্ন বাংলাদেশ মিশনে এমআরপি ইস্যু করা হচ্ছে। তবে জুলাইয়ে চালু হতে যাওয়া ই-পাসপোর্ট আরও বেশি আধুনিক। এতে একটি চিপের মধ্যে একজন নাগরিকের পাসপোর্টের প্রয়োজনীয় সব তথ্য থাকবে। কম্পিউটারে পাঞ্চ করেই পড়া যাবে এর তথ্য। এটি একজন নাগরিকের তথ্য সংরক্ষণের অত্যাধুনিক পদ্ধতি। তবে চিপের পাশাপাশি এতে কাগজের অংশও থাকবে।
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সাধারণ নাগরিকরা জুলাই থেকে ই-পাসপোর্টের সুবিধা পাবেন। নাগরিকদের হাতে এই পাসপোর্ট তুলে দিতে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর প্রকল্পটি চলতি অর্থবছর থেকে বাস্তবায়ন শুরু হবে। যা শেষ হবে ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে।
তিনি জানান, এটা সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নেই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে পাসপোর্টের ফি বৃদ্ধির প্রস্তাব পাওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন পাসপোর্ট ইস্যু, নিরাপত্তা বৃদ্ধি, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশি পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো এবং ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে বাংলাদেশি ও আগত বিদেশি নাগরিকদের সুষ্ঠুভাবে গমনাগমন নিশ্চিত করতেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সরকার। এটি বাস্তবায়ন হলে বিশ্বের যে কোনো স্থান থেকে একজন পাসপোর্টধারীর নম্বর সার্চের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সব তথ্য পাওয়া যাবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমআরপি ব্যবস্থায় একজন ব্যক্তির দশ আঙুলের ছাপ ডেটাবেসে সংরক্ষণ না থাকায় একাধিক পাসপোর্ট করার প্রবণতা ধরা পড়ে। ফলে ই-পাসপোর্টের প্রয়োজনীয়তা ব্যাপকভাবে অনুভব করে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদ্বোধনের সময় ই-পাসপোর্ট প্রবর্তনের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর জার্মানি সফরের সময় ২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সে দেশের প্রতিষ্ঠান ভ্যারিডোস জিএমবিএইচ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালুর বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়।
তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পাসপোর্ট অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ই-পাসপোর্ট চালুর।
প্রকাশক ও সম্পাদক: এ্যাডঃ শেলী সুলতানা
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: বিএম ফরহাদ হোসেন
প্রকাশক কার্যালয়: ৫৭১, পুর্ব কাজীপাড়া,
মিরপুর, ঢাকা -১২১৬
বার্তা কক্ষ: +৮৮ ০২৯০৩০৬৭৫
ইমেইল : editor@modhusanda24.com